চিকেন পক্স হলে করণীয় কি:
চিকেন পক্স হলে বেশ কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর চিকেন পক্স হলে করণীয় কি নিয়ে বিভ্রান্ত হওয়ার কিছুই নেই। পক্সে আক্রান্ত হলে রোগীকে আলাদা ঘরে রাখতে হবে। রোগী স্পর্শ করে যেমন থালাবাসন, কাপড়চোপড় বা এমন সব কিছুই অন্যদের থেকে পৃথক করে দিতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে ঠান্ডা লাগতে দেওয়া যাবে না। বেশি করে পানি পান করতে হবে। যথাসম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মেনে চলতে হবে। এ রোগে আক্রান্ত হলে অ্যালার্জি বাড়ে এমন খাবার ও পরিবেশ পরিহার করেতে হবে। শরীরে তেল দেওয়া যাবে না।
শরীরে জ্বর কমানোর জন্য প্যারাসিটামল জাতিয় ট্যাবলেট ব্যবহার করা হয়। অতিরিক্ত চুলকানো হলে অ্যান্টি হিসটামিন-জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন। এ সময় শরীর অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে তাই শারীরিক দুর্বলতা কমাতে বেশি করে তরল খাবারসহ ভিটামিন ও মিনারেলযুক্ত খাবার খান।
পক্স এর লক্ষণঃ
সাধারণত পক্স উঠার প্রথম দিকে জ্বরের মাত্রা বাড়তে থাকে। তার সাথে সারা শরীরে ব্যথা অনুভব হবে। ২-৩ দিন পর থেকেই শরীরে র্যাশ দেখা দিবে। র্যাশে প্রচুর পরিমানে চুলকানির অনুভব হবে। প্রথমে শরীরের মাঝামাঝির অংশে (বুক বা পেটে), পরবর্তীতে মুখমণ্ডলে র্যাশ দেখা দেয়। ধীরে ধীরে তা সারা শরীরে ছড়িয়ে পরে। মুখের ভিতর এবং গলার মিউকাস আবরণীতেও র্যাশ বের হয়। র্যাশ ৫-৭ দিন পর্যন্ত বের হতে থাকে। র্যাশে ধীরে ধীরে ফোস্কার মতো আকার নেয় এবং পরবর্তীতে ফোস্কার ভিতরে রস ঘন হয়ে পুঁজের মতো হয়।
পক্স কতদিন থাকে: ৭-১০ দিন পর থেকে তা শুকোতে থাকে। চিকেন পক্স হলে শরীর অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পরে।
খাবার
আক্রান্ত রোগী মাছ-মাংস, ডিম-দুধ সবই খেতে পারবে তবে সহজে হজম হয় এ জাতিয় খাবার খাওয়াই উত্তম। এসময় পুষ্টিকর খাবার খেলে রোগ আরোগ্য সহজ এবং দ্রুত হবে।
চিকেন পক্স এরঔষধ :
চিকেন পক্স ভাইরাস ঘটিত রোগ সাধারণত এই রোগে আক্রান্ত হলে বিশেষ কোনো ধরনের ওষুধ প্রয়োজন হয় না। সঠিক নিয়ম মেনে চললে ১০ থেকে ১৫ দিনেই পক্স নামক ভাইরাস ঘটিত রোগ ভালো হয়ে যায়। তবে ইনফেকশন প্রতিরোধে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টি ভাইরাল ঔষধ খাওয়া যেতে পারে। জ্বর, বা শরীর ব্যাথার জন্য প্যারাসিটামল জাতিয় ওষধ এবং সারা শরীরে ক্যালামাইন লোশন লাগানো যায়।
দাগ দূরকরতে:
দুই সপ্তাহের মধ্যে চিকেন পক্স সেরে গেলেও দাগগুলো থেকে যায়। অনেক সময় দেখা যায় পক্সের দাগগুলো চিরস্থায়ী হয়ে যায়। চিকেন পক্সের দাগ দূর করতে বাজারে বিশেষ ধরনের লোশন কিনতে পাওয়া যায়। এগুলো লাগানো যেতে পারে। এ ছাড়া শরীর, মুখ কচি ডাবের পানি দিয়ে ধোয়ালেও দাগ অনেকটা দূর হয়। তবে সম্পূর্ণ দাগ যেতে ৪/৫ মাস সময় লেগে যেতে পারে।
* আরও পড়ুন >> রাতের বিউটি টিপস – যে ৫টি বিউটি টিপস রাতে পালনীয়
* জেনে নিন >> রূপচর্চায় আলু ব্যবহারের অসাধারণ বিউটি টিপস
পক্স থেকে বাঁচার উপায়ঃ
বসন্তকাল আসলেই সবাই পক্সের ভয় করে। বর্তমানে আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বর্তমানে সারা বছরই চিকেন পক্স রোগ হওয়ার ঝুঁকি থাকে। পক্স ছোঁয়াচে রোগ সাধারণত এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ১০ থেকে ১৫ দিনের মাঝেই র্যাশ বা লক্ষণ প্রকাশ পায়। চিকেন পক্স হলে ছোট ছোট লালচে ফোস্কার মতো সারা শরীরে দেখা যায়। যেহেতু চিকেন পক্স হলে শরীর মারাত্মক চুলকায়, এতে ত্বকের লালচে ফোসকা বা র্যাশ ফেটে গিয়ে আরও উঠতে শুরু করে। একটু সতর্ক থাকার মাধ্যমেই চিকেন পক্সের প্রকোপ হতে দূরে থাকা সম্ভব। যেমন-
১. বসন্তকাল যেহেতু পক্স দেখা দেয় তাই ফুল-ফ্যাট দুধ ও চর্বি যুক্ত মাংস (স্যাচুরেটেড ফ্যাট) এমন খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো। এ জাতের খাবারে থাকা ফ্যাট ভ্যারিসেলা নামক ভাইরাসের সংক্রমণের গতিকে বাড়িয়ে দেয়। তাই এ সময় এ ধরণের স্যাচুরেটেড ফ্যাট বা চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো।
২. বাদাম, চকোলেট, বা বীজ জাতীয় যে কোন খাবার এ সময় এড়িয়ে চলা ভালো। কারণ, এই সকল খাবারে ‘আরজিনিন’ নামের এমাইনো এসিড থাকে যা হতে চিকেন পক্সের ভ্যারিসেলা নামক ভাইরাসের আগ্রাসন, সংক্রমণের গতি অনেকগুণ বাড়িয়ে তোলে।
৩. পক্স যেহেতু এটি ছোঁয়াচে রোগ, তাই যথা সম্ভব আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকতে হবে।
লেখাটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে শেয়ার করতে পারেন>>>>